Saturday, September 12, 2020

কাকে বেশি বেশি দাওয়াত দিবেন

 

 

প্রত্যেক নবী রসূলই দাওয়াত দিয়েছেন বা আল্লাহর দিকে আহবান করেছেন, তার আশেপাশের অমুসলিদেরকে। যে সমাজে রাসূল সা: এর উপর কুরআন নাযিল হয়েছিল সে সমাজে কোন মুসলিম ছিল না।কুরআন নাযিল হয়েছিল আহলে কিতাবীদের উপর। তাদেরকেই কুরআনের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। আজকে আমরা অমুসলিমকে দাওয়াত দিই না। আমরা মনে করি সে তো হিন্দ, সেতো খ্রিস্টান, তার কাছে গেলে সে কি মনে করবেসে দাওয়াত গ্রহণ করবে কি না ইত্যাদি ইত্যাদি। অমুসলিমদেরকে দাওয়াত দিতে সংকোচ বোধ করি। এই চিন্তা যদি ঠিক হতো তাহলে মূসা আ: ফিরাউনের নিকট, ইব্রাহীম আ: নমরুদের নিকট, রসূল সা: আবু জাহিলদের নিকট দাওয়াত দিতেন না। কুরআন এসেছে পথভ্রষ্টদের পথ দেখানোর জন্য। হেদায়েত প্রাপ্তদেরকে সুপথে পরিচালনার জন্য। এই কুরআন দিয়েই মুসলিমদেরকে ভাল মন্দ, হারাম হালাল ইত্যাদি শিক্ষা দিতে হবে। আর কাফিরদেরকে দিতে হবে এক আল্লাহর উপর ঈমানের দাওয়াত। আমরা শুধু মুসলিমকে দাওয়াত দিই। ঈমান আর পর মুসলিমকে দাওয়াত দিতে হয় না। মুসলিমকে দিতে ট্রেনিং।

 

মুসলিমের সামনে তুলে ধরতে হবে জান্নাতের খোশ খবর, জাহান্নামের ভয়াবহতা, শিখাতে হবে কিভাবে আমল করবে। কিভাবে হারাম হালাল থেকে বাঁচতে হবে। কিভাবে ইনসাফ করবে। কিভাবে হক কথা, ভাল কথা বলবে। কারো প্রতি যুলম করা যাবে না। এক কথায় পরিপূর্ণ ইসলামী নিয়মকানুন শিক্ষা দিতে হবে। এগুলো আপনি একজন অমুসলিমকে শিখাতে পারবেন না।

 

তাকে আপনি জানাতে পারেন ইসলামের সত্যতা।কেন সে ইসলাম গ্রহণ করবে সেই দালিলিক প্রমাণ।কুরআন হাদিস থেকে আপনি এগুলো তার সামনে উপস্থাপন করবেন। তাকে এক আল্লাহর দিকে আবহাবন তথা দাওয়াত দিবেন।

 

আমাদের দেশে গ্রামে গঞ্জে মাহফিলের আগে যে দাওয়াত দেওয়া হয় তাতেও মানুষ ভুল করে। তারা সেখানে শুধু মুসলিমদেরকে দাওয়াত দেয়।সম্ভোধন করা হয় সম্মানিত মুসলিম তাওহীদি জনাত বলে। কিন্তু বলা উচিৎ সম্মানিত এলাকাবাসি, ওমুক গ্রামবাসি আগামী কাল ধর্মীয় জলসা বা ইসলামী আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আপনাদের সবাইকে দাওয়াত রইল।উক্ত জলসায় অমুসলিমদেরকে  আকৃষ্ট করতে পারে এমন বয়ানই বেশি করা উচিৎ।

 

একজন মুসলিম ঈমানের ৬টি বিষয়ের উপর বিশ্বাস করে বলেই সে ঈমানদার, তাই তাকে ইমানের দাওয়াত দিতে হবে না।

প্রতিটি অমুসলিমকে আল্লাহর দিকে আহবান করতে হবে বা দাওয়াত দিতে হবে।প্রতিটি অমুসলিমের নিকট দাওয়াত পৌচে দেয়া প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।আল্লাহ চান প্রতিটি ব্যাক্তি তার উপর ঈমান আনুক।

আল্লাহ বলেছেন,

 

“তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন যাতে তিনি তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করেন”। ইব্রাহীম ১৪:১০

 

পাপ ক্ষমা করা মানে আল্লাহ তাকে জান্নাতে সুসংবাদ দিচ্ছেন।

আল্লাহ বলেছেন,

 

তুমি তোমার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়তপ্রাপ্তদের তিনি খুবই ভাল করেই জানেন”।আন নাহল ১৬:১২৫

 

কোন কাফিরের সাথে যখন ধর্মীয় বিষয়ে কথা হবে তখন প্রজ্ঞার মাধ্যমে দাওয়াত দিতে হবে। বিতর্ক করতে হবে সন্দর পন্থায়।অযথা বাড়া বাড়ি করা যাবে না।

ঈমান আনার পর কাউকে পথভ্রষ্টও বলা যায় না। অতএব আল্লাহ এই আহবান বা দাওয়াতের দ্বারা কাফিরদেরকেই বুঝিয়েছেন।

 

আল্লাহ বলেছেন,

 

আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছি ইবাদত-পদ্ধতি যা তারা অনুসরণ করবে। সুতরাং তারা যেন তোমার সাথে এ ব্যাপারে বিতর্ক না করে। তুমি তাদেরকে তোমার রবের দিকে আহবান কর, তুমি সরল পথেই আছ”। আল হাজ্জ ২২:৬৭

 

আর আল্লাহর আয়াতসমূহ তোমার প্রতি নাযিল হওয়ার পর তারা যেন তোমাকে তা থেকে বিরত রাখতে না পারে, তোমার রবের প্রতি তুমি আহবান কর এবং তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভক্ত হয়ো না”। আল কাসাস ২৮:৮৭

 

বিশ্ব মানবের জন্য রহমত হিসাবে রসূল সা: এর আগমন। কুরআনের আগমনও বিশ্ব মানবের কল্যাণেই। আর এ কল্যাণে যেন প্রতিটি অমুসলিম শরিক হতে পারে, তাই অমুলিমদেরকেই বেশি বেশি দাওয়াত দিতে হবে। এটা সকল মুসলিমের দায়িত্ব।

 


No comments:

Post a Comment

  চুলপড়ার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা                                                                              Homeopathic treatment to pre...